দেখুন টাঙ্গাইল তাঁত পল্লী আনন্দ ভ্রমণ উপস্থাপনায় এনিন





##উনবিংশ শতাব্দির শেষ দিকে টাঙ্গাইল তাঁতশিল্প প্রসার পায়। টাঙ্গাইল শাড়ির তাঁতিরা মূলত ওইতিহ্যবাহী মুস্লিন তাঁতীদের বংশধর। তাদের আদি নিবাস ছিল ঢাকা জেলার ধাম্রাই ও চৌহাট্টায়। তারা দেলদুয়ার, সন্তোষ ও ঘ্রিন্দা এলাকার জমিদারদের আমন্ত্রনে টাঙ্গাইল যায় এবং পরবর্তিতে সেখানে বসবাস শুরু করে। শুরুতে তারা নকশাবিহীন কাপড় তৈরী করত। ১৯০৬ সালে মহাত্মা গান্ধী স্বাদেশী আন্দোলনের ডাক দেন। এই আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল ইংল্যান্ডের ল্যাঞ্চাশায়ারের তৈরী কাপড় বর্জন করা। এই সময়ে তথকালীন পুর্ব বাংলা (বর্তমান বাংলাদেশ) এর তাঁতশিল্প প্রসার লাভ করে। ১৯২৩-২৪ সালে তাঁতের কাপড়ে নকশা প্রবর্তন করা হয়। ১৯৩১-৩২ সালে শাড়ি তৈরীর জন্য জাকুয়ার্ড তাঁত প্রবর্তন করা হয়।
#টাঙ্গাইল তাঁতশিল্প কুটির শিল্পও এবং তাঁতগুলো তাঁতীদের বাড়ির অভ্যন্তরে বসানো হয়। ৭২% কুটিরশিল্প পাঁচটি তাঁতের সমন্বয়ে গঠিত, ১১% তাঁত ছয় থেকে দশটি তাঁতের সমন্বয়ে গঠিত এবং ৬% তাঁত এগার থেকে বারোটি তাঁতের সমন্বয়ে গঠিত এবং অবশিষ্ট ১১% কুটিরশিল্প বারো এর অধিক তাঁতের সমন্বয়ে গঠিত। বারো এর অধিক তাঁত সম্বলিত কুটিরশিল্পগুলো ছোট কারখানা হিসাবে বিবেচনা করা হয়।[১]
১৯৯২ সালে, টাঙ্গাইল জেলায় ১ লাখের অধিক তাঁত ছিল এবং ১৫০০০০ তাঁতী সদর, কালিহাতি, নাগরপুর ও বসিল উপজেলায় বসবাস করত। ২০০৮ সালে ১০০০০০টি ছোট ও বড় কারখানায় ৩৭২২২টি তাঁত ছিল এবং ৭০০০০ তাঁতী টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন উপজেলার বেসিক সেন্টার এর অধীনে কাজ করত।[২] ২০১৩ সালের এক্টি শুমারীতে পাওয়া তথ্য অনুজায়ী, টাঙ্গাইল জেলায় অই সময়ে ৬০০০০ তাঁত ছিল। এর মধ্যে ৮৩০৫ টি পিট তাঁত, ৫১১৪১ টি চিত্তরঞ্জন তাঁত এবং ৮৯২ টি পাওয়ার তাঁত।
#টাঙ্গাইল তাঁতশিল্প এর একক বৈশিষ্টর জন্য বিশ্বজুড়ে সমাদ্দিত। টাঙ্গাইল শাড়ির তাতীরা বিশেষ দক্ষতার মাধ্যম টাংগাইল শাড়ি তৈরী করে। পাটাইল ইউনিয়নের বসাক সম্প্রদায় সব থেকে পুরোন সম্প্রদায় যারা এখপ্নো আদি ও অইতিহ্যবাহীতার সাথে তাঁতের শাড়ি তৈরী করে। এই শাড়ি তারা বাজিতপুর ও করটিয়া হাটে সপাহে দুই দিন বিক্রি করে। [১]
বর্তমানে সর্বমোত ৩২৫০০০ জন তাঁতী, মালিক ও ব্যবসায়ী-ক্রেতা এই পেশার সাথে সম্প্রিক্ত। ৩০০-২০০০০ টাকাইয় টাঙ্গাইল শাড়ি বিক্রি হয়ে থাকে।
##মহেড়া জমিদার বাড়ীর এক অংশের সামনে অবস্থিত একটি ফোয়ারা

১৮৯০ দশকের পূর্বে স্পেনের করডোভা নগরীর আদলে জমিদার বাড়ীটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।[১] স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকবাহিনী মহেড়া জমিদার বাড়ীতে হামলা করে এবং জমিদার বাড়ীর কূলবধূ সহ পাঁচজন গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে (১৯৭১)। পরবর্তীতে তারা লৌহজং নদীর নৌপথে এ দেশ ত্যাগ করেন। এখানেই তখন মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছিল। এ জমিদার বাড়ীটি পুলিশ ট্রেনিং স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় (১৯৭২)। এবং পুলিশ ট্রেনিং স্কুলকে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে উন্নীত করা হয় (১৯৯০)।
জমিদার বাড়ির সামনেই রয়েছে ‘বিশাখা সাগর’ নামে বিশাল এক দীঘি। বাড়িতে প্রবেশের জন্য রয়েছে ২টি সুরম্য গেট। ভবনের পিছনে রয়েছে পাসরা পুকুর এবং রানী পুকুর। শুভাবর্ধনে রয়েছে সুন্দর ফুলের বাগান। বিশাখা সাগর সংলগ্ন দক্ষিণ পার্শ্বে বিশাল আম্র কানন রয়েছে।
উপস্থাপনা :  এনিন

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

টাঙ্গাইলের আঞ্চলিক ভাষা বিলুপ্তপ্রায় কিছু শব্দ

সাগরদিঘী নাম করণেে ইতিহাস

টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যান