ঘাটাইলে শিক্ষক নিয়োগে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ

ঘাটাইল উপজেলার মোমিনপুর ডি.এস.পি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহায়ক কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগের অর্থ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে এক প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও বরাবর আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদনটি জমা দেওয়ার দুইদিনের মাথায় তড়িঘড়ি করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ আর্থিক লেনদেনের কারণেই তাড়াহুড়ো করেই এই নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। যেসব প্রার্থীর বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছিল তারাই নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছে। ২৫ লাখ টাকার বিনিময়ে এই দুইজন প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে দরখাস্তকারী মোঃ শরিফ তরফদারের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর আবেদনকারী সাদিকুল ইসলাম ও সহকারী প্রধান শিক্ষক আবুল হাশেম আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্ত হওয়ার জন্য পায়তারা করছে। অথচ তারা কম মেধাসম্পন্ন। প্রার্থীরা অর্থ লেনদেনের জন্য জমি বিক্রি করেছেন বলে তিনি আবেদনে উল্লেখ করেন। নিয়োগ পরীক্ষার একমাস আগে থেকেই এই দু’জন প্রার্থীকে নেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন বিদ্যালয় কমিটির পরিচালনা পরিষদ। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ.কে.এম শামসুল হক ১৪/১১/২০২০ইং তারিখে সরেজমিনে তদন্ত করেন। তদন্ত শেষে তিনি ১৫/১১/২০২০ইং তারিখ প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে তিনি মতামত প্রদান করেন যে, অভিযোগকারী লোক মুখে শুনে অভিযোগ দায়ের করেছেন, তবে এই অভিযোগ এলাকায় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি অনেকেই বিশ্বাস করেন। এমতাবস্থায় ১৭ তারিখে নিয়োগের জন্য পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। পরীক্ষায় ১৬ জন করে আবেদন করলেও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মাত্র ৫ জন। তড়িঘড়ি করে পরীক্ষা নেওয়ার কারণে অন্য প্রার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি বলে জানায় ভুক্তভোগী আবেদনকারীরা। জানা যায়, প্রভাবশালী একটি মহল পরীক্ষার নিয়োগের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে চাপ প্রয়োগ করেন। যার কারণে তদন্তের দুই দিনের মাথায় নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয় বলে জানা যায়। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। পরীক্ষায় আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি নিয়ে গত উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবু নিয়োগ স্থগিতের বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করেন। এ বিষয়ে তিনি সাপ্তাহিক জাহাজমারাকে বলেন, শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় লেনদেনের বিষয়টি আমি শুনেছি। এতে ব্যাপক আর্থিক লেনদেন হয়েছে। বিষয়টি আবারও তদন্তের মাধ্যমে পূর্বের নিয়োগ বাতিল ও পুনঃরায় নিয়োগের ব্যবস্থার জোর দাবি জানাচ্ছি এবং বিষয়টিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের দৃষ্টি কামনা করছি। এ বিষয়ে মোমিনপুর ডি.এস.পি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিকভাবেই হয়েছে, কোন আর্থিক লেনদেন হয়নি। মোমিনপুর ডি.এস.পি উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি বায়েজিদ বলেন, আমি কিছুদিন ধরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়ে তেমন জানা নেই। তবে, নিয়োগের বিষয়টি সঠিকভাবে হয়েছে বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, ঘাটাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ.কে.এম শামসুল হক বলেন, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সাথে নিয়ে নিয়োগ সম্পন্ন করেছি। পরীক্ষায় যারা প্রথম হয়েছেন তাদেরকেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর্থিক লেনদেন যদি হয়ে থাকে বিষয়টি আমার জানা নেই।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

টাঙ্গাইলের আঞ্চলিক ভাষা বিলুপ্তপ্রায় কিছু শব্দ

সাগরদিঘী নাম করণেে ইতিহাস

মধুপুর জাতীয় উদ্যান জীববৈচিত্র্যে ভরপুর